দরিদ্রদের ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্য সমন্বিত উন্নয়ন : দরিদ্রদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে স্ব-উন্নয়ন নেদারল্যান্ডের দাতা সংস্থা সিবিমো-এর আর্থিক সহায়তায় ১৯৯৪ সাল হতে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত রাজশাহীর বাঘা থানার ৬টি ইউনিয়নে সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে। এই কর্মসূচীর আওতায় দরিদ্রদের নিয়ে ১০৮টি দল গঠন করা হয়, অন্তর্ভূক্ত সদস্য ছিল ১৬৮০ জন। পুঁজি সৃষ্টির লক্ষ্যে সঞ্চয় সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ প্রদান সহ ১৫ জনকে আয়ুমুখী কর্মসূচী মৌমাছি পালনের প্রশিক্ষণ প্রদান করে এবং বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহারের বিষয়ে সচেতন ও অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে টিউবওয়েল ও স্বল্প মূল্যে স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা বিতরণের ব্যবস্থা করে। এছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় সংগঠিত জনগোষ্ঠীর ঋণ দান করে এবং নারীর ক্ষমতায়নে ১৪৬১ জনকে আইন সচেতনতা শিক্ষা প্রদান করে। এ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকারের সহায়তায় ২২০ জনকে ভিজিডি ও ভিজিএফ কার্ড প্রদান এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও মরুকরণ প্রক্রিয়া রোধে প্রায় ৪৫০০টি গাছ রোপনের ব্যবস্থা করে।

স্স্বাস্থ্য অধিকার প্রকল্প : স্ব-উন্নয়ন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পপুলেশন সার্ভিসেস এন্ড ট্রেনিং সেন্টার (পি.এস.টি.সি) এর সহযোগিতায় চারঘাট উপজেলায় ২০০৮ সাল থেকে স্বাস্থ্য অধিকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল এপ্রিল, ২০০৮ থেকে জুলার্ই, ২০১৩ পর্যন্ত। প্রকল্পের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার আদায়ে কাজ করা হয়েছে।

আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই হচ্ছে নারী। সুতরাং তাদের অধিকারকে উপেক্ষা করে এবং তাদেরকে একটি পশ্চাৎপদ অবস্থার মধ্যে রেখে জাতীয় উন্নয়ন একেবারেই অসম্ভব। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে আমাদের দেশের অধিকাংশ নারীই তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং জীবন যাত্রার আদর্শ মানের নীচে বাস করছে। পিতৃতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে উৎসারিত ধ্যান ধারণার কারণে নারীর অধিকার হরণের পক্রিয়াটি শুরু হয় পরিবার থেকেই। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সহেযগিতায় ’মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ এর অর্থায়েন বিগত ৩ বছর ‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ’’ নামে একটি গবেষণাধর্মী প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে স্ব-উন্নয়ন লক্ষ্য করেছে যে নারীর প্রতি সহিংসতা পারিবারিক পরিমন্ডলেই ঘটে বেশী পারিবারিক পর্যায়ে মহিলাদের উপর যে সহিংসতা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে তা নির্মূলের সত্যিকার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রকৃতপক্ষে কি করা প্রয়োজন তার বাস্তবভিত্তিক কোন দিক নির্দেশনা নেই। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের পাশাপাশি আমাদের প্রয়োজন আইনের কঠোর প্রয়োগ, কার্যকর প্রতিরোধ কর্মসূচী এবং আক্রান্ত মহিলাদের জন্য সহজলভ্য আভাসস্থল নিশ্চিত করা। যে জিনিসটা নিশ্চিত করা আমাদের সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন তা হচ্ছে পারিবারিক সহিংসতা বা নির্যাতন কোন ব্যক্তিগত বিষয় নয় তা সাধারণ মানুষকে বুঝানো। এটি একটি মারাতœক জাতীয় সমস্যা, সমাজ তথা জাতীয় পর্যায়ে যার প্রতি ব্যাপক দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। পারিবারিক সহিংসতা নিরসনের একটি উপায় হচ্ছে আইন প্রণয়ন ও এর যথাযথ প্রয়োগ, সর্বোপরী এ বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরী।

প্রকল্পের লক্ষ্যঃ কমিউনিটির জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণের মাধ্যমে নারীর জন্য সহিংসতামুক্ত সমাজ গঠন। প্রকল্পের উদ্দেশ্যঃ নারী ও কণ্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং তাদের অধিকার আদায় করার জন্য কমিউনিটির জনগণের বিশেষ করে নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুদের সেবার প্রবেশাধিকার বৃদ্ধির জন্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে (ইউনিয়ন পরিষদ, থানা, হাসপাতাল ও আদালত) সক্রিয় করা পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন বাস্তবায়নের জন্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সংবেদনশীলকরণ।