পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ,নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দল,ভিজিলেন্স টিম,স্টুডেন্ট িএ্যাকশন গ্রুপ,কিশোর/কিশোরী দল,যুবক দল ্র গ্রাম উন্নয় কমিটির মিটিং

কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না হলে ভিকটিম যদি চায় তাহলে প্রকল্প আইনজীবী কর্তৃক প্রেরিত নোটিশের মাধ্যমে উভয় পক্ষকে ডেকে সালিশের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। প্রকল্প মেয়াদে প্রত্যেক উপজেলায় মোট ২৮৮টি সালিশ সম্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সালিশ প্রক্রিয়া  ১ম নোটিশ প্রেরণঃ যদি কোন অভিযোগ সালিশের মাধ্যমে মিমাংসার সিদ্ধান্ত হয় তাহলে সংগঠনের প্যাডে সংযুক্ত ফর্মে প্রকল্প আইনজীবী কর্তৃক স্বাক্ষরিত ১ম নোটিশ প্রেরণ করতে হবে। নোটিশ রেজিস্ট্রি ডাকযোগে অথবা হাতে হাতে প্রেরণ করা যাবে তবে উভয় ক্ষেত্রেই প্রাপ্তি স্বীকার নিশ্চিত করতে হবে।  ২য় নোটিশ প্রেরণঃ ১ম নোটিশ অ-বিলিকৃত অবস্থায় ফেরত আসলে অথবা অভিযুক্ত ব্যক্তি নোটিশ অনুযায়ী হাজির না হলে প্রজেক্ট ফ্যাসিলিটেটর বা ভলান্টিয়ার বিষয়টির কারণ উদ্ঘাটন করে প্রকল্প কর্মকর্তা/ প্রকল্প আইনজীবীর সাথে পরামর্শক্রমে ১ম নোটিশে উল্লেখিত তারিখের পরবর্তী ৩ (তিন) দিনের মধ্যে ১২ (বার) দিনের সময় দিয়ে ২য় নোটিশ ডাকযোগে বা সরাসরি প্রেরণ করবেন তবে উভয় ক্ষেত্রে প্রাপ্তি স্বীকার পত্র নিশ্চিত করতে হবে।  ৩য় নোটিশ প্রেরণঃ ২য় নোটিশ অ-বিলিকৃত অবস্থায় ফেরত আসলে অথবা অভিযুক্ত ব্যক্তি নোটিশ অনুযায়ী হাজির না হলে প্রজেক্ট ফ্যাসিলিটেটর বা ভলান্টিয়ার বিষয়টির কারণ উদ্ঘাটন করে প্রকল্প কর্মকর্তা/প্রকল্প আইনজীবীর সাথে পরামর্শক্রমে ২য় নোটিশে উল্লেখিত তারিখের পরবর্তী ৩ (তিন) দিনের মধ্যে ১২ (বার) দিনের সময় দিয়ে ৩য় নোটিশ ডাকযোগে বা সরাসরি প্রেরণ করবেন তবে উভয় ক্ষেত্রে প্রাপ্তি স্বীকার পত্র নিশ্চিত করতে হবে। ১ম, ২য় ও ৩য় নোটিশ গ্রহণের পর অভিযুক্ত পক্ষ উপস্থিত হলে এবং উভয়পক্ষ সালিশ মিমাংসায় বিরোধটি মিমাংসা করতে চাইলে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সালিশের মাধ্যমে মিমাংসা করা হয়। সালিশের মাধ্যমে বিরোধটি মিমাংসা হলে সালিশ বৈঠকের কার্যবিবরনী ফরমেটে লিপিবদ্ধ করা হয়। যদি ৩য় নোটিশ প্রাপ্তির পরও অভিযুক্ত পক্ষ সালিশ বা অন্য কোন ভাবে বিরোধটি মিমাংসা করতে আগ্রহী না হয় অথবা সালিশ বৈঠক ব্যর্থ হয় তাহলে অভিযোগকারীকে মামলা দায়েরের আবেদন ফরম পূরন কের অভিযোগটি মামলায় প্রেরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়, তবে লক্ষ্য রাখতে হবে প্রকল্পের আওতায় পুরুষ অভিযোগকারীর পক্ষে কোর্টে মামলা করা যাবে না।

আইনী সহায়তা প্রদান কমিউনিটি ল’ সেন্টার/প্রকল্প অফিস থেকে যে কোন ধরনের অভিযোগ নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হয় কিন্তু কমিউনিটি ল’ সেন্টারপ্রকল্প অফিসে বিরোধ নিষ্পত্তিতে ব্যর্থ হলে অভিযোগকারীর পক্ষে আইনী সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে মামলা করার জন্য বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির লিগ্যাল এইড ক্লিনিকে প্রেরণ করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি থেকে অনুমোনের পর প্রকল্প আইনজীবী মামলা পরিচালনা করবেন। প্রকল্প মেয়াদে মোট ১০০টি মামলায় আইনী সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। নিম্ন আদালতে মামলা বিরোধ নিষ্পত্তি না হলে প্রয়োজনে মামলাটি নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে প্রেরণ করা হবে। এক্ষেত্রে মামলাটি বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নিজস্ব তত্ত্বাবাধনে পরিচালিত হবে। মামলাটি চলাকালীন সময়ে প্রকল্প আইনজীবী মামলার অগ্রগতি পর্যালোচনা করবেন ও আইনজীবীকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।

নৈতিক শিক্ষা ক্লাস পরিচালনা প্রকল্প এলাকার ১২টি মাধ্যমিক স্কুলে প্রতি মাসের নির্দিষ্ট একটি দিনে এক ঘন্টার একটি নৈতিক শিক্ষার ক্লাস চালু করা হয়। যে সমস্ত শিক্ষকরা মানবাধিকার ও পারিবারিক সহিংসতা বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন তাদের দ্বারা নৈতিক শিক্ষার ক্লাস পরিচালনা করা হয়। শিক্ষক মহোদয় এই ক্লাস পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি কর্তৃক সরবরাহকৃত বিশেষ মডিউল ব্যবহার করেন। নৈতিক ক্লাস পরিচালনার ক্ষেত্রে ‘স্টুডেন্ট এ্যাকশন গ্রুপ’ এর সদস্যরা শিক্ষকদের সার্বিক সহযেগিতা প্রদান করেন। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে মাধ্যমিক স্কুলের সকল ছাত্র ছাত্রী পরিবার ও পারিবারিক সম্পর্কের ভিত্তি এবং পারিবারিক পরিবেশ সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান অর্জন করবে যা তাদের মূল্যবোধ ও নৈতিকতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। নৈতিক শিক্ষা ক্লাসের কার্যক্রমসমূহ সহযোগী সংস্থার কর্মী ও সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রকল্প কর্মকর্তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেন।

মডেল ভিলেজের সাধারণ মানুষের অধিকার, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে রিসোর্স সেন্টারে প্রতিমাসে ০১টি করে আইন সচেতনতামূলক সভা আয়োজন করা হয়। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দলের সদস্য, প্রকল্প এলাকার যেকোন আগ্রহী ব্যক্তি, সহিংসতার শিকার নারী সভায় অংশগ্রহণ করেন। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দলকে আইন ও অধিকার বিষয়ে সচেতন করে তুলতে হবে। প্রত্যেক সভায় কমপক্ষে ১০ (দশ) জন অংশগ্রহণকারী থাকতে হবে। প্রকল্প আইনজীবী সভায় ধারাবাহিকভাবে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেন। তিনি আইন সম্বন্ধে আলোচনা করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী আইনগত পরামর্শ প্রদান করেন। মডেল ভিলেজের কোন নারী বা কিশোরীর তাৎক্ষনিক আইনী সহায়তা প্রয়োজন হলে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন । তবে আইনী সহায়তার জন্য সরকারি আইন সহায়তা তহবিল ব্যবহারে গুরুত্ব বা প্রাধান্য দেওয়া হয় । উপস্থিত প্রতিনিধিরা যাতে আইনজীবীর সাথে প্রশ্ন - উত্তর প্রক্রিয়ায় খোলামেলা আলোচনা করতে পারে-সে সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়। সভায় একইভাবে নারীর আইনী অধিকার, সহিংসতা সম্পর্কিত বিভিন্ন আইনের প্রায়োগিক দিক সমূহ প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ ছাড়া বাল্য বিবাহ, যৌতুক, পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ, হিল্লা বিবাহ, ধর্ষণ, এসিড সন্ত্রাস, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন, উত্তরাধিকার, তালাক, পারিবারিক আইন ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন-উত্তর আলোচনা করা হয়।

অর্থনৈতিক কারণে নির্যাতনের শিকার অনেক নারী দিনের পর দিন মুখ বুঁজে নির্যাতন সহ্য করতে হয়। নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা তাকে নির্যাতন থেকে মুক্ত করতে পারে। মডেল ভিলেজের মধ্যে বসবাস করে নির্যাতনের শিকার নারী বা নির্যাতনের ঝুঁকিতে আছে এমন নারী তার চাহিদা অনুযায়ী আয়বর্ধনমূলকর কাজ যেমন-কম্পিউটার, গার্মেন্ট, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, হাঁস-মুরগী পালন, গবাধিপশু পালনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। আমাদের প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ ফি প্রদান করা হবে। যাতে তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতে পারে।

কোন তথ্য/অভিযোগ/সত্যানুসন্ধানের ভিত্তিতে যদি বিষয়টি নিয়ে কাউন্সেলিং করার প্রয়োজন হয় তাহলে প্রজেক্ট ফ্যাসিলিটেঁর, ভলান্টিয়ার প্রকল্প কর্মকর্তা/প্রকল্প আইনজীবীর পরামর্শক্রমে ভিকটিমের কাউন্সেলিং করবেন। এছাড়া প্রকল্প কর্মকর্তা/প্রকল্প আইনজীবী অভিযুক্ত ব্যক্তির কাউন্সেলিং করবেন। কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হলে তা কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধান হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লে¬খ করতে হবে এবং সকল ডকুমেন্ট ভিকটিমের ফাইলে সংরক্ষণ কেো হয়।

হেলথ্ ক্যাম্প ও স্বাস্থ্য সচেতনতা নারীর স্বাস্থ্যহীনতা- পুষ্টিহীনতার সাথে নারীর প্রতি সহিংসতা, পারিবারিক সম্পর্কের টানা পোড়ন, স্বামীর বহুবিবাহ, যৌন নির্যাতন ইত্যাদির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। সাধারণত স্বাস্থ্যসেবায় নারীর প্রবেশাধিকার অত্যন্ত সীমিত। গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ অসুস্থ্যতায় তেমন কোন চিকিৎসা পরামর্শ পায় না। উপরুন্তু কুসংস্কারের কারণে ভুল চিকিৎসার শিকার হয় এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যায়। মডেল ভিলেজে নারীদের স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে সঠিক পরামর্শ ও স্বাস্থ্য বিষয়ে তাদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রতি কোয়ার্টারে অন্তত একবার একজন এমবিবিএস (মেডিসিন) ডাক্তারকে রিসোর্স সেন্টারে বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ঔষধপত্র বিনামূল্যে প্রদান করা যেতে পারে। স্বউন্নয়ন বাঘা উপজেলার গৌরাঙ্গপুর ও হরিণা মডেল গ্রামে স্বাস্থ্য বিষয়ে নি¤েœাক্ত সেবা প্রদান করেন। নারীর স্বাস্থ্যহীনতা- পুষ্টিহীনতার সাথে নারীর প্রতি সহিংসতা, পারিবারিক সম্পর্কের টানা পোড়ন, স্বামীর বহুবিবাহ, যৌন নির্যাতন ইত্যাদির প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। সাধারণত স্বাস্থ্যসেবায় নারীর প্রবেশাধিকার অত্যন্ত সীমিত। গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ অসুস্থ্যতায় তেমন কোন চিকিৎসা পরামর্শ পায় না। উপরুন্তু কুসংস্কারের কারণে ভুল চিকিৎসার শিকার হয় এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যায়। মডেল ভিলেজে নারীদের স্বাস্থ্য সমস্যার ক্ষেত্রে সঠিক পরামর্শ ও স্বাস্থ্য বিষয়ে তাদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে তিন মাসে একবার একজন এমবিবিএস (মেডিসিন) ডাক্তার প্রতিরোধ সেন্টারে বসেন। নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ঔষধপত্র বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। ডাক্তার নির্দিষ্ট দিনে গ্রামের নারী-পুরুষদের বিনামূল্যে পরামর্শ দেন এবং কিশোরী ও নারীদের বিশেষত প্রজনন স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক সেশন পরিচালনা করেন। প্রজনন স্বাস্থ্য পরিচর্যা, গর্ভবতী মায়ের যত্ম, শিশুর যত্ম ইত্যাদি বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কুসংস্কার দূরীকরণে ডাক্তার কাজ করেন। আলোচনায় নারী স্বাস্থ্য যত্মের প্রয়োজনীয়তা, কুফলসমূহ, স্বাস্থ্য সমস্যা বিষয়ে নারীর নিরবতা ভঙ্গ, কিশোর- কিশোরী স্বাস্থ্যের যত্ম ও প্রজনন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় পিতা মাতার দায়িত্ব, সে সব বিষয়ে আলোকপাত করেন হেলথ্ ক্যাম্প কোনভাবেই ডাক্তারী পরীক্ষা বা প্রেসকিপশন বা ঔষধ বিতরন নয়। বরং নারীদের স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণে আগ্রহী এবং প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করানোই মূলকাজ। উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা ডাক্তারের সাথে প্রশ্ন-উত্তর প্রক্রিয়ায় খোলামেলা আলোচনা করতে পারে-সে সুযোগ উন্মুক্ত থাকতে আছে। হেলথ্ ক্যাম্প ও স্বাস্থ্য সচেতনতা