Logo

 

ব্র্যাক এর সেবা সমূহ

জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ এবং প্রস্তুত থাকা।

হিউম্যানিটেরিয়ান ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম (এইচসিএমপি)

হিউম্যানিটেরিয়ান ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম (এইচসিএমপি)

মাইগ্রেশন কমর্সূচি

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন কমর্সূচি অভিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাদের প্রয়োজনীয় সেবাপ্রাপ্তি সহজ করার জন্য কাজ করছে। মাইগ্রেশন কমর্সূচি তাদেরকে প্রতারিত হওয়া থেকে রক্ষা করে । এই কমর্সূচি অভিবাসনর্পূব, অভিবাসনকালীন এবং প্রত্যাবর্তন পরবর্তী-এই তিনটি পর্যায়ে সকল ক্ষেত্রে কাজ করে এবং অভিবাসী কর্মীদের অধিকার ও মযর্দা রক্ষা করে নিরাপদ অভিযান নিশ্চিত করে।

সমন্নিত উন্নয়ন কর্মসুচি

ব্র্যাক ২০১১ সালে কেীশলত অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সর্বাধিক প্রান্তিক ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর বহুমাত্রিক দারিদ্র দুরীকরণের লক্ষ্যে ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (আইডিপি) তথা সমন্নিত উন্নয়ন কর্মসুচি শুরু করেছে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যথা হাওর ও চরাঞ্চলে বসবাসকারী এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠী, যারা উন্নয়ন উদ্যোগের মূলধারা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে, তাদের ও বিপন্নতা হ্রাসকল্পে আইডিপি কাজ করে চলেছে ।

আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম

৬টি সিটি করপোরেশন ও ১৪টি পৌরসভায় ইউডিপি পরিচালিত হচ্ছে।

ব্র্যাক মানবিক সহায়তা কর্মসূচি

ব্র্যাক মানবিক সহায়তা কর্মসূচি (বিএইচপি)’র মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ব্র্যাকের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি, আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদান এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে যোগসূত্রবিষয়ক জ্ঞান প্রদান করে দুর্যোগ মোকাবেলা ও ঝুঁকি হ্রাসকল্পে এলাকার জনগোষ্ঠীকে প্রস্তুত করে তোলা। দুর্যোগকালীন সময়কে নানা স্তরে ভাগ করে জনগোষ্ঠীর নিকট দ্রুত সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ব্র্যাক এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরস) তৈরী করেছে যাতে দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে ব্র্যাককর্মী, প্রত্যেক মাঠকর্মী এবং কর্মসূচির সদস্যদের করণীয় সম্পর্কিত কার্যপ্রনালি লিপিবদ্ধ করা আছে। এছাড়াও ওয়েব এবং মোবাইলফোনে আবহাওয়ার পূর্বাভাস তথ্য প্রদান ও ইমারজেন্সি সার্পোট সার্ভিস এর মাধ্যমে সম্ভাব্য দুর্যোগের সময় তথ্য সংগ্রহ করে জনগোষ্ঠীকে সচেতন করে তোলা হয়। তদুপরি বাংলাদেশে কৃষিকাজে সহায়তা করার জন্য কৃষিপ্রধান অঞ্চলসমূহে আটটি আবহাওয়া অফিস স্থাপন করা হয়েছে। বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্য দুটি স্থানান্তরযোগ্য ডিস্যালাইন প্ল্যান্ট আমদানি করা হয়েছে এবং তেতাল্লিশটি দুর্যোগসহনীয় আবাসন এবং একটি দুর্যোগসহনীয় স্কুল তৈরী করা হয়েছে। এ ছাড়া এই বিভাগ স্থানীয় পটভূমিতে আন্তর্জাতিক স্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের উপাত্ত বিশ্লেষণ প্রয়োগিক সহায়তা, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং গবেষণা কাজের মধ্যে সংযোগসূত্র গড়ে তোলে।

এডুকেশন

এডুকেশন ফর অল বাংলাদেশ, আফগানিস্থান, পাকিস্থান, উগান্ডা, দক্ষিণ সুদান এবং ফিলিপাইন-এই ছয়টি দেশে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই কর্মসূচি বিশ্বব্যাপী সাত লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রী নিয়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বেসরকারী সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থা গরড় তুলেছে। ব্র্যাকের কার্যকর এবং সাশ্রয়ী মডেলের স্কুলগুলো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে ঝরে-পড়া ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পড়ালেখার সুযোগ করে দিচ্ছে। ব্র্যাকস্কুলগুলো নতুন ধরণের শিক্ষাদানপদ্ধতি ও উপকরণ নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থার সম্পূরক হিসেবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ শিশুকে শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসছে, যাদের বেশিরভাগই অতিদারিদ্র্য, সংঘাত, বঞ্চনা ও উচ্ছেদের শিকার। যেসব এলাকা বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় জলমগ্ন থাকে, সেখানকার শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে ব্র্যাক নৌকা স্কুল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচি সুবিধাবঞ্চিত ঘরের শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষাদান করে মূলধারার স্কুলের জন্য প্রস্তুত করে তোলে। বিশেষায়িত স্কুলের মাধ্যমে আদিবাসি জনগোষ্ঠীর শিশু এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষার অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। শিশুদের সর্বাঙ্গীন বিকাশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্কুলে সহপাঠক্রমিক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি গ্রামাঞ্চলের মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক এবং ব্যবসাথাপনা কমিটির সদস্যদের প্রয়োজনভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করে। প্রশিক্ষণের বিষয়গুলো হচ্ছে: দক্ষতা বৃদ্ধি, সহপাঠক্রম ও দলগত কাঝে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করে মেন্টরিং উদ্যোগের বাস্তবায়ন এবং এর মাধ্যমেক্লাসে উপস্থিতি বাড়ানো ও ঝরে পড়া রোধ। মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে ই-লানিং পদ্ধতির প্রচলন করার ফলে বোর্ড পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা কৃতিত্ব দেখিয়েছে। ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি মেধাবৃত্তি কার্যক্রম পরিচালনা করে যার মাধ্যমে মেধাবী দরিদ্র শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে দেশে এবং দেশের বাইরে পড়ালেখা করা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ পাচ্ছে।ি কিশোর ও তরুণবয়সীদের প্রতি বাড়তি মনোযোগ প্রদান করে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি বিশেষ কার্যক্রমের প্রচলন করেছে।এর মা্ধ্যমে তাদেরকে জীবনদক্ষতা, জীবিকা এবং কর্মক্ষতার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মৌলিক আর্থিক শিক্ষা ও আর্থিক সেবার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ব্র্যাকের কিশোর কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা একটি নিরাপদ পরিবেশে সমবয়সীদের সঙ্গে মেলামেশার মাধ্যমে তাদের চরিত্র গঠন ও সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ পায়। এই ক্লাবগুলো কিশোরী মেয়েদের বিকাশের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা তৈরী করতে সহায়তা করে। আমাদের বহুমূখি গণকেন্দ্র পাঠাগারগুলোর মোবাইল লাইব্রেরি বাড়ি বাড়ি বই পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের পাঠাভ্যাস গড়ে তুলছে এবং একই গ্রামীণ যুববয়সীদের কর্মসংস্থানে সহপয়তা করছে।

জেন্ডার জাস্টিস এন্ড ডাইভারসিটি

জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি বিভাগ ব্র্যাকে সর্বত্র নারীদের সমানাধিকার ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে । এই বিভাগ সমানাধিকারের মূল্যবোধগুলো সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসুচির মধ্যে অর্ন্তভূক্ত করার মাধ্যমে সমাজের জেন্ডারবৈষম্য দূর করার জন্য কাজ করে । এই বিভাগ নারীপুরুষের জেন্ডারভূমিকা সম্পর্কে সংগঠন ও সমাজে সচেতনতা গড়ে তোলে এবং জনগোঠীর মধ্যে একটি জেন্ডারবান্ধব প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে সহায়তা করে, যাতে নারীপুরুষ ও শিশুদের জন্যবৈষম্য এবং সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায় ।এ ছাড়াও এই বিভাগ জেন্ডারসাম্য প্রবর্ধন এবং জাতীয় পর্যায়ে সরকারের বিভিন্ন নীতিমালা এবং আলোচ্যসুচিকে প্রভাবিত করে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কাজ করে । এই বিভাগ জেন্ডারসাম্য নিশ্চিত করার জন্য আলোচনাসভার আয়োজন, কর্মসুচি পালন এবং জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক মৈত্রীজোট তৈরির জন্য কাজ করে ।

স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যা

ইএইচসি, মানসী, ভিশন বাংলাদেশ, রিডিং গ্লাস, পুষ্টি,সাসটেইনেবল ক্লাবফুট কেয়ার ইন বাংলাদেশ ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচি দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত এবং প্রান্তবাসী মানুষের কাছে প্রতিরোধমূলক, প্রচারমূলক, প্রতিকারমূলক ও পূনর্বাসনমূলক সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়নের জন্য জনগোষ্ঠীর ক্ষমতা, মানবসম্পদের উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ এবং সহায়তামূলক পরিবেশ তৈরী জরুরী বলে স্বাস্থ্য কর্মসূচি বিবেচনা করে। ব্র্যাকের স্বাস্থ্য কার্যক্রমে মূখ্য ভূমিকা পালন করেন স্বাস্থ্যসেবিকারা। গ্রাম ও শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নারীরা ব্র্যাক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাস্থ্যসেবিকার কাজ করেন। তারা তাদের এলাকায় দরিদ্র লোকদের দোরগোড়ায় গুরুত্বপূর্ন স্বাস্থ্যরসবা ও সামগ্রী পৌঁছে দেন। ব্র্যাক কর্তৃক প্রশিক্ষিত এই স্বাস্থ্যসেবিকারা দেশের বার কোটি মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে জরুরী স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছেন। এভাবে তারা দেশের প্রচলিত স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্যসেবাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে সেতুবদ্ধ তৈরী করে দিচ্ছেন। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে বহুবিধ উদ্যোগের প্রবর্তন করা হয়েছে। জরুরী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য-উদ্যোগ সাধারণ জনগনের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন।এগুলোর মধ্যে রয়েছে গর্ভবতী, মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টিশিক্ষা, ছাঁয়াচে ও অছোঁয়াচে রোগ প্রতিরোধ ও সাধারণ জীবনমান উন্নয়ন। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় স্বাস্থ্য এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মসূচি সরকার ও অন্যান্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে যৌতভাবে কাজ করছে।

মানবাধিকার ও আইন সহায়তা

মানবাধিকার ও আইন সহায়তা, বাংলাদেশ প্রপারটি রাইটস ইনিশিয়েটিভ ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়তা (এইচআরএলএস) কর্মসূচি দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে মানবাধিকার এবং আইনগত অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলার জন্য আইনশিক্ষা, আইনি সহায়তা ও ক্ষমতায়নের জন্য তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বৈষম্য ও বঞ্চনা থেকে রক্ষা করা এবং তাদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা। এ পর্যন্ত এই কর্মসূচির আওতায় ৩,৭৪৮,৬৮৯ জন আইনশিক্ষা লাভ করেছেন, ৫১৭টি আইনসহায়তা ক্লিনিক ১৭৮,৯২৬টি অভিযোগ গ্রহণ করেছে, ৯৬৭২২টি মামলার ক্ষেত্রে বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি করা হয়েছে, আদালতে বিচাধীন ১৬২৫৫টি মামলার রায় আমাদের মক্কেলদের পক্ষে হয়েছে এবং মামলা ও বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তির মাধ্যমে মক্কেলদের আর্থিক ক্ষতিপূরণবাবদ ৮০২,২২১,৯৮৬ টাকা আদায় করে দেওয়া হয়েছে। মানবাধিকার আইন ও সহায়তা কর্মসূচির মূল বৈশিষ্ট্য হল: * দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে মানবাধিকার ও আইন সম্পর্কে সচেতন করে তোলা এবং তাদের ক্ষমতায়ন ঘটানো । * আইনি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে বিরোধ নিস্পত্তি করা। * শিশু ও নরীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইনি ব্যবস্থাকে কাজে লাগানো। * আইনি দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে মানবাধিকার জেন্ডারসাম্যরে মূলনীতি সম্পর্কে সচেতন করার জন্য অগ্রনী ভূমিকা পালন করা। * সামাজিক কর্মকান্ডকে অনুপ্রাণিত করবার লক্ষ্যে সরকার ও অধিকারভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনে সহায়তা করা। * প্রাতিষ্ঠানিক পূনর্গঠন এবং সুস্থচর্চার বিকাশে এক সঙ্গে কাজ করা।

মাইক্রোফাইন্যান্স

উদ্ভাবনশীল, টেকসই এবং জনগোষ্ঠীকেন্দ্রিক মাইক্রোফাইন্যান্স কমর্সূচি ব্র্যাকের সামগ্রিক কর্মকৌশল অনৃসরন করে প্রান্তিক মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করছে । গত চার দশকের অভিযাত্রায় এই কমর্সূচি দরিদ্রদের আর্থিক সহায়তা এবং জীবনমান উন্নয়নের উপকরণ জুগিয়ে এক্ষত্রে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সেবাদানকারী হিসেবেন নিজেদের তুলে ধরেছে । লক্ষ লক্ষ মানুষ এই সহায়তা নিয়ে তাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে । রাজশাহীতে এই কমর্সূচির সদস্যসংখ্যা ১ লাখ এবং বকেয়া ঋণের পরিমান ২১৪২২.৫৯ লাখ টাকা । বাংলাদেশ ছাড়াও আফগানিস্তান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা, লাইবেরিয়া, মায়ানমার এবং তানজানিয়ায় মাইক্রোফাইন্যান্স কাযর্ক্রম পরিচালিত হচ্ছে । চলমান কর্মসূচিগুলি হচ্ছে দাবি, প্রগতি,এনসিডিপি, এসসিডিপি, বর্গাচাষী উন্নয়ন

আল্ট্রা পুওর গ্রাজুয়েশন প্রোগ্রাম (ইউপিজিপি)

চ্যালেঞ্জিং দি ফ্রনটিয়ার্স অব প্রভার্টি রিডাকশন ব্র্যাকের অতিদরিদ্র কর্মসূচি নামে একটি বিশেষ কর্মসূচি রয়েছে। অর্থনৈতিক পিরামিডের ভিত্তিস্তরে বাস করে যারা, তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের ক্ষেত্রে অতিদরিদ্র কর্মসূচি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নিজেদের নূন্যতম খাদ্যচাহিদা পূরণ করতেও এই জনগোষ্ঠীকে অনেক কষ্ট করতে হয়। ক্ষুদ্রঋণ ও মূলস্রোতের অন্যান্য দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচির আওতায় আসতে তারা সক্ষম হয় না। এই জনগোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধাপ অতিক্রমে সহায়তা করার লক্ষ্যে যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্পদ হস্তান্তর, কর্মদক্ষতা উন্নয়ন এবং বিশেষ স্বাস্থ্যসেবার সুবিধা। সর্বসাম্প্রতিক এক গুরুত্ব মূল্যায়ন গবেষনায় দেখা গেছে যে, এ কর্মসূচির প্রায ৯৫ শতাংশ সদস্য অতিদারিদ্রের আবর্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে এবং কর্মসূচির প্রথম ছয় বছরে এই ইতিবাচক পরিবর্তনগুলো পরিলক্ষিত হয়েছে। উদ্দিষ্ট গনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই ক্ষুদ্রঋণ তথঅ মূলস্রোতের সেবা গ্রহণ করতে সক্ষম হচ্ছে। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ব্র্যাক আফগানিস্থান এবং ব্র্যাক পাকিস্থানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।

ওয়াটার স্যানিটেশন এন্ড হাইজেন (ওয়াশ)

ব্র্যাকের ওয়াটার , স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) কমর্সূচি বাংলাদেশের ২৪৮টি উপজেলার গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগনের নিকট টেকসই ও সমন্বিত ওয়াটার, স্যানিটেশন ও হাইজিনসেবা পৌছে দেওয়ার মাধ্যমে অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন, দুষিত পানি এবং অনিরাপদ স্বাস্থ্য অভ্যাসের কারণে সৃষ্ট দূষণচক্রের অবসানকল্পে কাজ করছে । এসব উদ্যোগের স্থায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই কমসূর্চি তার আওতাধীন জনগোষ্ঠীর মধ্যে অংশীদারিত্বের বোধ জাগিয়ে তোলে, স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের মঙ্গে সংযোগ তৈরি করে দেয় এবং স্যানিটেশনপণ্যের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা যাতে সল্পমূ্যে পণ্য সরবরাহ রেতে পারে সেজন্য কার্ক্রম পদক্ষেপ গ্রহণ করে ।ওয়াশ কমসূর্চির কাজের পধান পাঁচটি ক্ষেত্র হল, পানি (পানির পুরোনো উৎসের প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং অগ্রসর প্রযুক্তির ব্যবহার) স্যনিটেশন (স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন স্থাপন, ক্ষুদ্র উদ্যোকাতাদের বিকাশ এবং দরিদ্র জনগণের জন্য ঋণ, ভতুর্কি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা), হাইজিন ( স্বাস্থ্যবিষয়ে আচরণগত পরিবতর্নে সহায়তা), স্কুল স্যানিটেশন ও হাইজিন শিক্ষা (মেয়েদের জন্য স্যানিটেশন সুবিধা ও হাইজিন শিক্ষার ব্যবস্থ্যা) এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠনসমূহ, উদ্যোক্তা ও কর্সূচির অন্য অংশীদারদের সহযোগীতা প্রদান) । প্রথম পর্যায়ে ওয়াশ কর্সুচির আওতায় ১৫০টি উপজেলায় ৩৮.৮ মিলিয়ন লোকের জন্য হাইজিন শিক্ষা,২৫.৬ মিলিয়ন লোকের জন্য স্যানিটারি ল্যাট্রিন এবং ১.৮ মিলিয়ন লোকের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয় । দ্বিতীয় পর্য়ে আগের ১৫০টি উপজেলার সঙ্গে আরও ২০টি নতুন উপজেলায় কার্ক্রম সম্প্রসারণপূর্বক কর্সূচির আওতাভূক্তির পরিমান ৯০ শতাংশ উন্নীত করে ২ মিলিয়ন লোকের জন্য স্যানিটারি টয়লেটের ব্যবস্থা, ৪.২ মিলিয়ন লোকের হাইজিন সচেতনতা বৃদ্ধি, পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ০.৫ মিলিয়ন লোকের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা হবে । এই প্রকল্প স্যনিটেশনের ক্ষেত্রে নব নব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যার লক্ষ্য হচ্ছে কর্সূচি পরিচালিনায় একটি টেকসই এবং বিস্তারশীল মযেল তৈরি করা, যাতে ১৫০টি উপজেলাসহ নতুন উপজেলার অতিদরিদ্র লোকের সাশ্যয়ী ও প্রযুক্তিনির্র পয়ঃনিস্কাশন সেবা প্রদান করা যায় । এই প্রকল্প স্যানিটারিরিসামগ্রীর বাণিজ্যিক বিপণনে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের দক্ষতা চিহ্নিত করে তার বিকাশ ঘটায় এবং ল্যাট্রিনের বর্জ্র থেকে উৎপাদিত বিপুল পরিমান জৈবসার বাজারজাত করে ।

স্কিলস ডেভেলপমেন্ট

হার্ড টু রিচ এরিয়ার শিশু: কিশোর ও তরুণী যাদের বয়স ১৪-১৮ বছর এবং যারা অতি দরিদ্র পরিবারের তাদের প্রতি বাড়তি মনোযোগ প্রদান করে ব্র্যাক স্কিলস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম বিশেষ কার্যক্রমের প্রচলন করেছে। এর মাধ্যমে তাদেরকে জীবনদক্ষতা, জীবিকা এবং কর্মদক্ষতার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মৌলিক আর্থিক শিক্ষা ও আর্থিক সেবার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। একটানা ছয়মাস ওস্তাদের মাধ্যমে উপযোগি ট্রেড ভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও প্রতিমাসে ১০০০টাকা করে জীবিকা নিরবাহ ভাতা দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।

সোস্যাল এন্টারপ্রাইজেস

Aarong, Artificial Insemination, Chicken, Cold Storage, Dairy & Food Project, Fisheries, Nursery, Printing Pack, Recycle Handmade Paper, Sanitary Napkin & Delidery Kit, Seed & Agro Enterprise, Sericulture, Salt and Ayesha Abed Foundation

• সামাজিক ক্ষমতায়ন

সিইপি কর্মসূচি; ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচি জনগোষ্ঠিকে উদ্বুদ্ধকরণ ও সচেতনতাকে কাজে রুপান্তরের মাধ্যমে দরিদ্র জনগণ বিশেষত নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করে। এই কর্মসূচি দরিদ্র এবং প্রান্তিক জনগনের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য তাদেরকে প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগায়। প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মানবিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক পঁজি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সিইপি কার্যকর ভূমিকা পালন করে, যাতে তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে তা আদায়ে তৎপর হয়, শোষনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং জনজীবনে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে সমর্থ হয়। এসব লক্ষ্য অর্জনের জন্য গ্রামীন সংগঠন তৈরী, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালীকরণ, তথ্যে প্রবেশগম্যতার নিশ্চয়তা এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ- এই ক্ষেত্রেগুলোতে কর্মসূচি কাজ করছে।বাংলাদেশের ৬১ টি জেলার ৯ লক্ষ ৫০ হাজারের অধিক গ্রামীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সামাজিক ভাবে উদ্বুদ্ধকণের মাধ্যমে এই কর্মসূচির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

 

NGO সমূহ